ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

ঈদ বাজার চকরিয়ার মার্কেটগুলো সরগরম, নিম্নআয়ের মানুষের ভরসা ভাসমান দোকান

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::

চকরিয়ার ঈদ বাজার ২০ রমজানের পর থেকে বেশ জমে উঠেছে । দম ফেলারও ফুসরত নেই দোকানিদের। একদিকে জনজট এবং অন্যদিকে তীব্র গরমের মধ্যেও পছন্দের পোশাক কিনতে গভীর রাত পর্যন্ত বিপণি বিতানগুলোতে ভিড় করছে সব বয়সের মানুষ।

বলতে গেলে প্রতিটি বিপণি বিতানের অলি-গলিতে তিল পরিমাণ জায়গা খালি নেই, যেখানে চোখ যায় শুধু বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষে ঠাসা। পৌরশহর চিরিঙ্গার অন্তত ২০টি বিপণি বিতান ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ পৌরশহর চিরিঙ্গা আসছেন কেনাকাটা করতে। বেশি বিক্রি হচ্ছে রকমারি শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, জুতাসহ নানা রকমের পণ্য-এমনটাই জানালেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে বড় বড় বিপণি বিতানগুলোতে উচ্চ এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন বিকিকিনি করতে গেলেও একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষের পছন্দের পোশাক ক্রয়ের একমাত্র স্থান পৌরশহরের বিভিন্নস্থানে বসা ফুটপাতের ভাসমান দোকানগুলো। সেখানে নিম্ন আয়ের মানুষের ঢল নেমেছে ঈদের পোশাক ক্রয় করতে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ক্রেতারা বেশি ভিড় করছেন আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্স, সিটি সেন্টার, ওয়েস্টার্ন প্লাজা, সুপার মার্কেট, নিউমার্কেট, ওশান সিটি, সমবায় মার্কেট, রূপালী শপিং কমপ্লেক্স, দুলাল সেন্টার ও বাবু মিয়া শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বিপণি বিতানে চলছে এই বিকিকিনি। তবে গতবছরও ক্রেতা টানতে মাইকের প্রচারের যে প্রতিযোগিতা ছিল সেই শব্দদূষণ থেকে পৌরবাসীকে এবার পরিত্রাণ দিয়েছে বিপণি বিতানগুলো।

এদিকে চকরিয়া পৌরশহরে আগত ক্রেতাদের নিরাপত্তায় পুলিশের একাধিক টিম পোশাকে এবং সাদা পোশাকে বিপণি বিতানগুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন। আবার নারী পুলিশ সদস্যরাও সাদা পোশাকে বিপণি বিতানে ঘুরছে ক্রেতাদের নিরাপত্তায়। এতে চোর, ছিনতাইকারী, ইভটিজার ও পকেটমারের উপদ্রব কমে গেছে। একইসঙ্গে পৌরসভার কমিউনিটি পুলিশ ও থানার পুলিশ মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রমজান মাস শুরুর ২০ দিন পর্যন্ত দিনে কমবেশি বেচাকেনা ছিল। এর পর থেকে বেশ জমে ওঠেছে ঈদবাজার। ভোররাত পর্যন্ত চলছে বেচাবিক্রি।

নিউ মার্কেটের চকোরী বস্ত্রালয়ের মালিক সত্যজিৎ ধর বলেন, ‘এবারের ঈদবাজারে নারীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইন্ডিয়ান বিভিন্ন আইটেমের শাড়ি। এর মধ্যে জামদানি, কাতান, চেন্নাই শাড়ির চাহিদা বেশি। একইসঙ্গে হাতের কাজ করা শাড়িও কিনছেন অনেকে। আবার বিভিন্ন নামের সালোয়ার কামিজেরও কদর বেশি রয়েছে এবারের ঈদে।’

উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চরণদ্বীপ এলাকার দিলোয়ার জাহান, পশ্চিম বড় ভেওলার দরবেশকাটার রেজিয়া বেগমসহ কয়েকজন নারী জানান, দোকানে দোকানে নজরকাড়া শাড়ি ও সালোয়ার কামিজের সমারোহ রয়েছে। এসব পণ্যের মানও ভালো। তাই বিক্রেতারা দাম ধরে বিক্রি করছেন।

চকরিয়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রেজাউল হক সওদাগর চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘ঈদ বাজারে আগত ক্রেতাদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বিপণি বিতানগুলোর পক্ষ থেকে।’

চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘পৌরশহরে কেনাকাটা সারতে আসেন চকরিয়াসহ আশপাশের অন্তত ৫টি উপজেলার মানুষ। তাই তাদের সার্বিক নিরাপত্তায় পৌর কমিউনিটি পুলিশকেও নিয়োজিত করা হয়েছে।’

চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া এ পর্যন্ত অন্য কোনো অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেনি। এজন্য পুলিশের বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ সদস্য পোশাকে এবং সিভিলে দায়িত্ব পালন করছে।’

পাঠকের মতামত: